চিত্রপরিচালক ও লেখক সার্থক দাশগুপ্তের মুখোমুখি: অর্ঘ্য দত্ত

সাক্ষাৎকার: অর্ঘ্য দত্ত



(নেটফ্লিকৠসে সার্থক দাশগুপ্তেঠ° 'মিউজিক টিচার' সিনেমাটা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলামॠ¤ জানতাম, এই সিনেমাটার স্ক্রিপ্টৠর জন্য মুম্বাইয়ৠর সার্থক পেয়েছিল প্রেস্টিজঠয়াস 'দ্য সানড্যান্স মাহিন্দা গ্লোবাল ফিল্মমেকাঠ° এয়াওর্ড'। সিনেমাটাও দেখানো হয়েছে আমেরিকার তিনটে চলচ্চিত্র উৎসবে। হিউস্টন ফেস্টিভালৠএই সিনেমার নায়িকা অমৃতা পেয়েছে শ্রেষ্ঠ à¦…à¦­à¦¿à¦¨à§‡à¦¤à§à¦°à§€à ° পুরস্কার। ওর বানানো ইংরাজি ভাষার সিনেমা 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান বাটারফ্লাঠ'-ও খুব প্রশংসিত হয়েছিল। অংশ নিয়েছিল নানান আন্তর্জাতঠক উৎসবে। সার্থকের জন্ম মুম্বাইয়ৠ, বেড়ে ওঠাও। অথচ বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে জন্মসূত্রৠপাওয়া সম্পর্কটাঠে কিন্তু ও উপেক্ষা করেনি। পড়াশোনা মুম্বাইয়ৠর দাদারে বাংলা স্কুলে। গান শিখেছে শুধু নয়, অসাধারণ দক্ষতায় গাইতে পারে একের পর এক বাংলা রাগপ্রধান সংগীত। এবারের আমচি মুম্বাই বিভাগের জন্য কথা বললাম সেই সার্থক দাশগুপ্তেঠ° সঙ্গে।)

সিনেমা বানাবে এমন শখ কবে থেকে হল?

আমার বাবা রতন দাশগুপ্ত একটি সাংস্কৃতিঠ• সংস্থা চালাতেন। আমার নামেই সেই সংস্থার নাম à¦¦à¦¿à¦¯à¦¼à§‡à¦›à¦¿à¦²à§‡à ¨à¥¤ সার্থক রূপায়ন। সেখানে à¦›à§‹à¦Ÿà§‹à¦¬à§‡à¦²à¦¾à¦¯à ¦¼ বাবাকে দেখতাম নাটক পরিচালনা করতে। তখন থেকেই শুনে আসছি স্টেজ ক্র্যাফট নিয়ে, স্ক্রিপ্ট নিয়ে, পরিচালনা নিয়ে নানানরকম কথাবার্তাॠসেই বয়সে খুব মনোযোগ দিয়ে যে শুনেছি তা হয়তো নয়। কিন্তু এখন বুঝতে পারি অল্প বয়সে শোনা সে সব কথাই ছাপ রেখে গিয়েছিল মাথার ভেতরে। নাকি বুকের ভেতরে! আমি তখন গান শিখতাম। আমার মা জয়ন্তী দাশগুপ্ত ছিলেন à¦°à¦¾à¦—à¦¸à¦™à§à¦—à§€à¦¤à §‡à¦° একজন সুদক্ষ গায়িকা। তারপর স্কুল শেষ করে ইঞ্জিনিয়ঠরিং করলাম। লাইনটা বদলালো। এমবিএ করলাম। লাইনটা আরো বদলালো। এবং আরো নিশ্ হয়ে উঠতে লাগলো। আমি যখন এমবিএ পড়ছি তখনো আমার এ ব্যাপারে কোন আলাদা আকর্ষণ ছিল না। এমনকি কাউকে গল্প বলা বা লেখার প্রবণতাটুঠুও খেয়াল করিনি। আমি যেখান থেকে এমবিএ করি, পুনের সিমবায়োসঠস ইউনিভার্সঠ¿à¦Ÿà¦¿, তার পাশেই ছিল ফিল্ম ইনস্টিটিউঠŸà§‡à¦° ক্যাম্পাসॠসেখানে আমার এমন কিছু বন্ধুবান্ধ ব হয় যারা পড়াশোনা করছিল সিনেমা নিয়ে। দু'বছর ওদের সান্নিধ্য, ওদের সঙ্গে আড্ডার একটা প্রভাব হয়তো কোথাও থেকে গিয়েছিল। তারপর, এমবিএ করে যখন মুম্বাই ফিরে আসি চাকরি নিয়ে, ওই বন্ধুদের অনেকেও ফিরে এসেছিল সিনেমা জগতে জীবিকার সন্ধানে। অনেকেই খুঁজে নিয়েছিল নানান রকম কাজ, সব‌ই ছিল ফিল্ম মেকিং সংক্রান্তॠ¤ অনেকেই প্রতিষ্ঠিত পরিচালকদেঠ° পরিচালনায় সাহায্য করত। এদিকে আমি চাকরি করতে করতে উপলব্ধি করতে থাকলাম, এই ফাইন্যান্ঠএর কাজ আমায় তৃপ্তি দিতে পারছে না। তারপর রবিবার গুলো যখন ওই সব বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হতো, ওদের মুখে গল্প শুনতাম, কোন সেটে কী ঘটছে, কে কীভাবে কোন সিনেমা বানাচ্ছে। এই সব শুনতে শুনতেই একদিন মনে হল, বাহ, এই জীবনটা তো খুব সুন্দর! আগে কেন ভাবিনি! কিন্তু নতুন করে কোনো ফিল্ম ইনস্টিটিউঠŸà§‡ ভর্তি হ‌ওয়াটা তখন ওই বয়সে আমার পক্ষে আর সম্ভব ছিল না। তবুও অনেক চেষ্টা করেছি, অনেককে অনুরোধ করেছি, যদি কোনো পরিচালকের অ্যাসিস্টৠযান্ট হিসেবে কাজ শুরু করা যায়। কিন্তু আমার যেহেতু কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না, তাই বিশেষ সুবিধা করতে পারিনি। তবু হাল ছাড়িনি। তারপরে একটা সময় টানটা এমন গভীর, এমন তীব্র হয়ে উঠল যে সিদ্ধান্ত নিলাম যদি কিছু করতেই হয় তবে এই সিনেমা বানানো, গল্প বলাই হবে আমার কাজ। কীভাবে হবে সে সম্বন্ধে তখন কিছুই জানতাম না। সবচেয়ে আগে যেটা দরকার ছিল বলে বুঝেছিলাম সেটা হলো নিজের জন্য সময় বের করা এবং ঝাঁপিয়ে পড়া। এবং ঝাঁপানো বলতে আক্ষরিক অর্থেই ঝাঁপানো। এবং সেই জন্যেই কাউকে না বলেই, কিংবা হয়তো বলেছিলাম কিন্তু তারা à¦…à§à¦¯à¦¾à¦•à¦¸à§‡à¦ªà§à Ÿ করতে পারেনি যে এত পড়াশোনা করে আমি এই সিনেমা বানানোর লাইন বেছে নেব, আমি à¦°à§‡à¦œà¦¿à¦—à§à¦¨à§‡à¦¶à ¾à¦¨ দিয়ে বাড়ি চলে এসেছিলাম। তারপর অনেক কষ্টে নানান মানুষের থেকে একটু একটু করে শিখে, বই পড়ে একটা বেসিক জায়গায় এসে পৌঁছলাম যখন বুঝতে শিখলাম যে পর্দায় একটা গল্প বলতে গেলে ঠিক কী কী প্রয়োজন। আজ যেমন মনে হয় আমি পারি, কিন্তু কিছুদিন আগেও বুঝতে পারতাম না আমি ঠিকভাবে একটা গল্প সিনেমার মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে পারছি কিনা। আসলে আমি তো প্রথাগতভাঠে কিছু শিখিনি। সবটাই শিখতে হয়েছে কাজ করতে করতে, বাধা পেতে পেতে। একটা মানুষ যদি প্যারাসুট ছাড়াই উপর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে যেমন পড়তে পড়তে ভেবে নিতে হয় কীভাবে জীবন রক্ষা করব এবং ভাগ্য সহায় হলে হয়তো বেঁচেও যেতে পারে, আমার সিনেমা করতে আসাটা এবং টিকে যাওয়াটাও অনেকটা সেরকমই। আসলে ঝাঁপিয়ে পড়াটাই আসল। ঝাঁপিয়ে পড়তে পারলে শিখেও নেয়া যায় ধীরে ধীরে।

বাঁধা চাকরি ছেড়ে ছবি বানানোর মতো অনিশ্চিত পেশা গ্রহণের সিদ্ধান্তৠপরিবারের প্রতিক্রিঠ়া কেমন ছিল?

প্রথম প্রতিক্রিঠ়াই ছিল, তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে? নাকি ইয়ার্কি করছিস? ওরা বিশ্বাস‌ই করতে পারছিল না যে মজা নয়, আমি সত্যিই চাকরি ছেড়ে দিয়ে সিনেমা বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওরা ভাবছিল আমি হয় মজা করছি না হলে ঐ ফিল্মি বন্ধুদের প্রভাবে সাময়িক হুজুগে মেতেছি। তারপর দ্বিতীয় স্টেজে আমাকে বলার চেষ্টা হলো যে এই চাকরিটা পছন্দ না হলে আমার অন্য চাকরি খুঁজে নেওয়া উচিত। তারপরও যখন সবাই বুঝতে পারলো যে আমি আমার সিদ্ধান্তৠঅনড়, এটা কোনো মজা বা হুজুগ নয় তখন পর্যায়ক্ঠমে চলল কখনো বোঝানো, কখনো বকাবকি, কখনো মন কষাকষি, নানান ভাবে চাপ দেওয়া যাতে আমি মত পাল্টাই। হয়তো ওটাই স্বাভাবিক, আমি হলেও বোধহয় তাই করতাম। কিন্তু, জানি না, এখন যখন ভাবি মনে হয়, আমি আজকের সময়ের বাবা হয়ে এখন আর আমার সন্তানের এমন কোনো সিদ্ধান্তৠবোধহয় বাধা দেব না। তার কারণ এই যে মাঝ পথে গন্তব্য পাল্টেও যে কোথাও পৌঁছানো যায় এ অভিজ্ঞতাটঠআমি যেমন আজ নিজের জীবন দিয়ে অর্জন করেছি, তখন আমার মধ্যবিত্ত à¦…à¦­à¦¿à¦­à¦¾à¦¬à¦•à¦¦à§‡à ° সেটা ছিল না। তবে আমি কিন্তু ওই প্রতিক্রিঠ়াকে স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছিলাঠ® এবং জানতাম এ সবের মধ্যেই আমাকে কাজ করে যেতে হবে। তারপর যখন সবাই জানতে পারল যে আমি চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে এসেছি, এবং সিনেমা বানানোর ব্যাপারে আমি সত্যিই সিরিয়াস তখন কিন্তু ওরাই আমার পাশে থেকেছে। স্ত্রী, নীনা তো সহযোগিতা করেছেই এমনকি বাবা-মাও খোঁজ খবর নিতেন আমার কাজের, চাইতেন আমি যেন সফল হ‌ই, জীবনে যা কিছু পাওয়ার আমি যেন পাই। তারা আমার কিছু সফল মুহূর্ত দেখে যেতে পেরেছেন এটুকুই স্বান্তনা। তবে আমি জানি ওঁদের আশীর্বাদ আমার সঙ্গে আছে।

দুটো সিনেমাই নিজের লেখা গল্প নিয়ে। লেখক হিসেবে পরিচিত হতে ইচ্ছা করে না? পাঠক না দর্শক, কাদের কথা ভেবে লেখ?

অর্ঘ্যদা, এই প্রশ্নটা বেশ ইন্টারেস্ঠŸà¦¿à¦‚। আসলে আমি নিজেও অনেক সময় ভাবি লেখালেখি না সিনেমা করা কোনটা আমার বেশি প্রিয়! হ্যাঁ একটা কথা ঠিক যে আমি লিখেছি প্রচুর। আমার লেখার অভিজ্ঞতা বেশি। এবং যেহেতু প্র্যাক্টঠস মেকস পারফেক্ট, ফলে এতদিনে শব্দ ব্যবহারের দক্ষতা, লেখায় একটা ব্যালান্স, একটা ধার এসেছে। আমার একটা নিজস্ব স্টাইল তৈরি হয়েছে বলে আমি মনে করি এবং জানি সেটা ইউনিক। ফিল্ম ডাইরেক্টর হিসাবে আমার কাছে অনেক স্ক্রিপ্ট আসে, সেগুলো পড়তে গিয়ে এমন অনেক খুঁত চোখে পড়ে যেগুলো আমার নিজের লেখায় এড়াতে শিখে গেছি। এখন বুঝতে পারি, একটা লেখা তৈরি করতে গিয়ে অনেকবার বদলাতে হলেও, আমার প্রথম খসড়াটাও কিন্তু মোটামুটি ভালোই দাঁড়িয়ে যায়।
এদিকে এটাও চাই যে লোকে আমাকে ফিল্মমেকাঠ° বলেই চিনুক। আসলে পর্দায় একটা গল্প বলার জন্য অভিনয়, মিউজিক, লাইট, এমন আরো অনেক কিছু যে ব্যবহার করতে পারি, তাতে গল্পটাকে যেন আরো ভালো করে বলার স্কোপ বেড়ে যায়। এবং আলাদা ভাবেও এই প্রত্যেকটঠ¿ বিষয়ে অনেক কিছু শেখার আছে, এগুলোকে চুড়ান্ত শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। টেলিভিশনেঠ° কাজগুলো বাদ দিলে আমি এখনো পর্যন্ত মাত্র দুটোই তো ছবি বানাতে পেরেছি। 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান বাটারফ্লাঠ' এবং 'মিউজিক টিচার'। কাজেই সিনেমায় এখনো আমার অনেক কিছু করা বাকি রয়ে গেছে। আরো কিছু ছবি বানানোর পরে হয়তো একদিন লেখাতেই বেশি মনোযোগ দেব।
তোমার প্রশ্নের দ্বিতীয় যে অংশটা অর্থাৎ দর্শক না পাঠক কার কথা মাথায় রেখে লিখি, তার উত্তরে এক কথায় বলতে গেলে বলব, আমি লিখি পাঠকদের জন্য কিন্তু লিখি এমনভাবে যেন তা দেখাও যায়। আসলে নভেল তো লিখি না, লিখি মূলত স্ক্রিপ্টॠফলে আমার লেখা গল্পের মধ্যে এমন একটা ভিজুয়াল ক্লারিটি থাকে, এমন ছোট ছোট ডিটেলিং থাকে যে কেউ পড়লে তার চোখের সামনে দৃশ্যগুলো ভেসে ওঠে। অথচ এক‌ই সঙ্গে লেখার স্কিল অর্জন করতে পেরেছি বলে ইকনমি অফ ওয়ার্ডস নিয়ে সচেতন থাকি। হলিউডের স্ট্যান্ডা র্ডে মোটামুটিভঠবে যেহেতু একটা সিনেমার স্ক্রিপ্ট একশো পাতার হওয়া উচিত, আমি সেটা মনে রেখেই লিখি। চেষ্টা করি যেন তার মধ্যেই যা কিছু বলার ছবির মতো করে বলতে পারি। অতএব সত্যি কথা বলতে গেলে এখন আমি একই সঙ্গে পাঠক ও দর্শক দুজনের কথা মাথায় রেখেই লিখে যাচ্ছি।

à¦ªà§à¦°à¦¯à§‹à¦œà¦•à¦¦à §‡à¦° পক্ষ থেকে বাজেটের রেস্ট্রিকঠ¶à¦¨ না থাকলে যে ছবি দুটো তুমি বানিয়েছ তার নির্মাণে কি কোন পরিবর্তন হত? আমি কিন্তু স্টার কাস্ট এর কথা বলছি না।

খুব মেজর কিছু পরিবর্তন না হলেও, কিছু তো অবশ্যই হত। আসলে কম বাজেটের ছবিতে একটা মারাত্মক প্রেসার এর মধ্যে আমাদের কাজ করতে হয়। দেখো, একটা সিনেমা তৈরীর আর্ট সংক্রান্ত প্রায় যাবতীয় বিষয় প্রি-প্রডাঠশনেই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু শুটিং চলাকালীন সেটে এমন নানান বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কম বাজেটের ছবিতে যার জন্য চিন্তা করার সময় পাওয়া যায় না। ধরো, সেটে গিয়ে দেখলাম ক্যামেরাটঠ¾ যেখানে রাখবো ভেবেছিলাম সেখানে রেখে ছবি তুললে যেমন ভেবেছিলাম সেই এফেক্ট আসছে না, অথবা কেউ দেরি করে সেটে পৌঁছচ্ছে কিংবা কোন পোশাক পছন্দ হলো না, তখন যে ইনস্ট্যানৠট সিদ্ধান্ত নিতে হয় তার জন্য যথেষ্ট ভাবার সময় পাওয়া যায় না। শুটিংয়ে বেশি সময় মানেই বেশি খরচ। কম বাজেটের ছবিতে এই যে একটা নিরন্তর চাপের মধ্যে কাজ করে যেতে হয়, তাতে কোথাও না কোথাও ছবির কোয়ালিটিঠ¤à§‡ ছাপ পড়ে।
এই সিনেমা গুলোর জন্য আমাকে যদি দ্বিগুন বা তিনগুনও টাকা দেয়া হতো, তবু নিশ্চয়ই আমি সমস্তটা খরচ করতাম না। কিন্তু অন্তত তিরিশ পার্সেন্ট বাজেট‌ও যদি বেশি পাওয়া যেত, আমি হয়তো দৃশ্যগুলো নিয়ে আরেকটু গভীরভাবে ভাবতে পারতাম। কোন কোন দৃশ্য আর একটু ক্লাসি করে চিত্রায়ন করতে পারতাম। আসলে আমরা সবাই জানি যে প্রেসারে কাজ করা মানেই তার কোয়ালিটিঠ¤à§‡ সামান্য হলেও ছাপ পড়া।

মনোরঞ্জন ছাড়া সিনেমার কি আর কোন ভূমিকা আছে বলে তুমি মনে করো?

খুব সুন্দর প্রশ্ন করলে অর্ঘ্যদা। প্রথমেই বলি আমরা একটা নতুন সময়ে বাস করছি। যুগটা কিন্তু বদলে গেছে। বিনোদনের জন্য মানুষের কাছে এখন অনেক বিকল্প। ফোনের মধ্যে অজস্র প্ল্যাটফর্ ম, টিভিতে সহস্র চ্যানেল, মাল্টিপ্লৠক্সে একাধিক পর্দা। যে কোন মুহূর্তে তুমি যে কোন ভাষার সিনেমা দেখতে পারো। দেখতে পারো বিদেশি সিনেমাও। ফলে মানুষকে আর জোর করে কিছু দেখানো যায় না। ধরো, তুমি যদি নির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য কমিউনিকেট করবে স্থির করে একটা সিনেমা বানাতে চাও, সেটা সমাজ পরিবর্তন সংক্রান্ত বা মানবিক আদর্শ সম্বন্ধেই হোক, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কোনো মতাদর্শ নিয়েই হোক অথবা এমন যে কোনো বিষয়ই হোক, তা বানাতে হবে এমন সাটল্ ওয়ে, কৌশলে বিষয়কে এমন প্রচ্ছন্ন করে, যাতে আলটিমেটলি সিনেমাটা একটা এন্টারটেনঠেন্ট হয়ে ওঠে। কারণ আমি মনে করি তুমি নিজে যদি একটা ব্র্যান্ড না হও, মানে তুমি যদি এতটাই নামী না হও যে তুমি যা বানাবে তাই দর্শক দেখতে আসবে, তাহলে দর্শকদের সিনেমাটা দেখতে বাধ্য করাটাই প্রথম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। আর দর্শক তখনই একটা সিনেমা দেখতে আসবে যখন সে বিশ্বাস করবে যে এই সিনেমাটা তাকে আনন্দ দেবে, বিনোদন দেবে।
কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতঠ­à¦¾à¦¬à§‡ যেটা মূল, তা হল আমি সিনেমাটা কেন বানাচ্ছি? হ্যাঁ, টাকা খরচ করে সিনেমা তৈরি হয়েছে এবং সেই লগ্নি করা টাকা প্রযোজককে ফিরিয়ে দিতে হবে এটা যেমন একটা লক্ষ্য, তার চেয়েও আমার কাছে বড় লক্ষ্য হলো সিনেমাটা বানিয়ে আনন্দ পাওয়া। সৃষ্টির আনন্দ। তারপরে প্রশ্ন হল কী বিষয়ে কাজ করে আমি আনন্দ পাই! হ্যাঁ আমি প্রয়োজনে থ্রিলার লিখেছি, ডার্ক স্টোরি লিখেছি, রিলেশনশিপ নিয়ে তো সিনেমাই বানিয়েছি... কিন্তু সব থেকে বেশি আনন্দ পাই সেই গল্প বলতে যেখানে মানুষের মনোজগতের যে সব দৃশ্যমান আপাত স্তর থাকে তার গভীরে গিয়ে, তাকে ধীরে ধীরে সরিয়ে, আসল মানুষটাকে বুঝে নেওয়া যায়। তার মনের অন্দরমহল কে উন্মোচন করা যায়। এরপরে যখন সেই সিনেমাটা বানাতে যাই, তখন à¦…à¦­à¦¿à¦¨à§‡à¦¤à¦¾à¦¦à§‡à ° সেই চরিত্রের স্তর গুলোকে ব্যাখ্যা করা, আরো নিবিড় করে চরিত্রের গভীর মানসিক বৈশিষ্ট্যঠুলোকে চিনে নিতে পারা, এসব আমাকে খুব আকর্ষণ করে, আনন্দ দেয়। এবং দর্শকরা যখন সেই সিনেমাটা পছন্দ করে তখন মনে হয় স্ক্রিপ্ট লেখা থেকে সিনেমাটা বানানো এই সমস্তটা যেন এক আনন্দযাত্ঠা। কিন্তু আমি বিশেষ কোনো ইস্যু মাথায় নিয়ে, যেমন ধরো নারী নির্যাতন বা অন্য কিছু, সিনেমা বানাতে শুরু করি না। আমার সিনেমাতে এ সব কিছুই হয়তো থাকে বা থাকবে, কিন্তু আমি যেখান থেকে সিনেমাটা আরম্ভ করবো তা অবশ্যই মানুষের মনোজগতের কোন একটা বিশেষ দিক নিয়ে। এবং দিনের শেষে এমন একটা ছবি বানানোর চেষ্টা করব যা করে আমি নিজে আনন্দ পাব, যার ভেতরে থাকবে মানুষের গভীর মনস্তত্ত্ব ের শৈল্পিক উন্মোচন, এবং যা দেখে দর্শকরা‌ও আনন্দ পাবে।

তোমার প্রিয় লেখক কারা? প্রিয় ব‌ই কী?

এভাবে বলাটা বেশ মুশকিল। আমি খুব একটা নির্দিষ্ট ডিসিপ্লিন মেনে পড়াশোনা করি না। সত্যি বলতে আমার ননফিকশন‌ই বেশি পড়া হয়, এবং সেটাও নীড বেসড। অনেক ব‌ই হয়তো কিনে আনি, কয়েকটা পাতা পড়ে রেখে দিই, পুরোটা শেষই করতে পারি না। যে চ্যাপ্টারট ায় প্রয়োজনীঠ¯à¦¼ তথ্য আছে সেটুকু পড়ে রেখে দিয়েছি। ফিকশনের ক্ষেত্রেও আমার কোনো একজন বা দুজন প্রিয় নেই। অনেকেরই অনেক লেখা খুব ভালো লেগেছে। এমন হয় কোনো লেখকের একটা লেখা খুবই ভালো লাগলো, কিন্তু অন্যগুলো ভালোই লাগলো না।
আমি হিউম্যান সাইকোলজির ওপরে ব‌ই পড়ি, ম্যানেজমেঠ¨à§à¦Ÿ বিষয়ক ব‌ইও পড়ি আবার কুন্ডলিনী এনার্জি নিয়েও পড়াশোনা করতে ভালোবাসি। তবে পড়ার সময়‌ও তো বিশেষ পাই না, ফলে বেশিরভাগই দরকারের পড়া। কোনো বিশেষ লেখকের বা ব‌ইয়ের নাম করতে পারবো না।

যদি যে কোনো ভাষার দশটা প্রিয় সিনেমার নাম করতে বলি।

আবারও বিপদে ফেললে অর্ঘ্যদা। এত সিনেমা ভালো লেগেছে যে আমার পক্ষে দশটা আলাদা করে বেছে নেওয়া খুব মুশকিল। আসলে আমি প্রচুর সিনেমা দেখি, এক একটা সিনেমার হয়তো খুব ভালো লাগে, কিন্তু সমস্যা হলো আমি দুদিন বাদে ভুলেও যাই। একদম মনে রাখতে পারি না। হয়তো আমার ফিল্মমেকাঠ° বন্ধুরা কোনো সিনেমা নিয়ে সবাই মিলে খুব আলোচনা করছে আর আমি ভাবছি, ইস্, এত ভালো সিনেমাটা দেখাই হয়নি! বাড়ি ফিরে তাড়াতাড়ি গুগল করে দেখি সিনেমাটা দু মাস আগেই à¦¦à§‡à¦–à§‡à¦›à¦¿à¦²à¦¾à¦®à ¥¤ ভালোও লেগেছিল। কিন্তু, সিনেমার নাম, পরিচালকের নাম সব ভুলে গেছি। আসলে আমি আলাদা করে কোনো শট, ক্যামেরা মুভমেন্ট, আলোর ব্যবহার, অভিনয় এসব কিছুই মনে রাখতে পারি না। যা আমার মধ্যে থেকে যায় তা হলো সেই ভালোলাগার এসেন্সটুকৠà¥¤ এতে একটা বড় সুবিধা এই যে আমি যখন নিজে সিনেমা করি তখন ঐ সব সিনেমার কোনো প্রত্যক্ষ প্রভাব থাকে না। ভেতরে থেকে যাওয়া এসেন্সটুকৠ নিজের মতো করে বেরিয়ে আসে। কাজেই আমার অনেক প্রিয় সিনেমার কথা একসঙ্গে মনে পড়ছে, কিন্তু দশটি মাত্র ভালোলাগার সিনেমার কোনো নির্দিষ্ট তালিকা নেই। না ব‌ইয়ের না ছবির।

অনেক ধন্যবাদ, সার্থক। তোমার ভবিষ্যতের সমস্ত উদ্যোগের জন্য র‌ইল অফুরান শুভেচ্ছা।

আমারও কথা বলে খুব ভালো লাগলো অর্ঘ্যদা। বম্বেDuck পত্রিকার জন্য রইল আমারও আন্তরিক শুভেচ্ছা।

ফেসবুক মন্তব্য

Copyrights © 2016 All Rights Reserved by বম্বেDuck and the Authors
Website maintained by SristiSukh CMS
kusumarghya@yahoo.com